স্যামসাঙ কেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফোন উৎপাদনকারী? জানুন
স্যামসাঙ কেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফোন উৎপাদনকারী?
বিশ্বব্যপি স্মার্ট ফোন সরবরাহে স্যামসাঙ কিভাবে শীর্ষে অবস্থান করে আসছে তাহলে চলুন সেটা জানা যাক।
বহুজাতিক ইলেক্ট্রনিক ও তথ্য প্রযুক্তি কোম্পানি স্যামসাঙ ইলেক্ট্রনিকস ২০১২ সালে একক বিক্রয় দ্বারা বিশ্বের বড় মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারক হিসেবে উঠে আসে।
তবে এতে অবাক হবার কিছুই নেই। কারণ দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান স্যামসাঙ গ্রুপ এর স্যামসাঙ ইলেক্ট্রনিকস বিশ্বের শীর্ষস্থানীও ইলেক্ট্রনিক সামগ্রি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।
স্যামসাঙ একাই দক্ষিণ কোরিয়ার মোট জিডিপির ১৭ শতাংশ অর্জন করে। স্যামসাঙ বিশ্বব্যপী শুধু মোবাইল এর ব্যবসাই নয় পাশাপাশি আরও ৮০ টি বহুমুখী ব্যবসা করে।
পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু দালান বুরজ আল খলিফা , মালেশিয়ার পেট্রোনাস্টিন টাওয়ার ও তাইওয়ান এর তাইপি একশ এক সহ বহু অট্টালিকা নির্মাণ করেছে স্যামসাঙ।
স্যামসাঙ এর আছে ২০৪ টি ফুটবল মাঠের আয়তনের সমান জাহাজ নির্মাণ কেন্দ্র সেখানে স্যামসাঙ বিশ্বের বড় বড় পণ্যবাহী জাহাজ নির্মাণ করে।
এছাড়াও তারা নানা ধরনের যুদ্ধা অস্ত্র ,ট্যাঙ্ক ,যেট ইঞ্জিন এবং তৈরী পোশাক সহ নানা ধরনের পণ্য তৈরী করে।
স্যামসাঙ এর রয়েছে প্রায় ৫ লাখ কর্মী যা অ্যাপেল গুগল ও মাইক্রোসফট এর সম্মিলিত কর্মীর সংখ্যার চেয়েও অনেক বেশি।
স্যামসাঙ যাত্রা শুরু করে ১৯৩৮ সালে একটি নুডলস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে। আর ১৯৬০ সালে স্যামসাঙ ইলেক্ট্রনিক শিল্পে প্রবেশ করে।
স্যামসাঙ এর তৈরী প্রথম ইলেক্ট্রনিক পণ্য একটি ২১ ইঞ্চি সাদা কালো টেলিভিশন সেট। ১৯৮৩ সালে স্যামসাঙ প্রথম কম্পিউটার নির্মাণ করে।
১৯৯০ সালে স্যামসাঙ একটি আন্তর্জাতিক কর্পোরেশন হয়ে উঠতে শুরু করে। ১৯৯২ সালে বিশ্বের বড় মেমরি চিপ নির্মাণ কারক হয়ে উঠে স্যামসাঙ।
বর্তমানে বিশ্বের সিংহ ভাগ মোবাইল এমনকি অরিজিনাল আইফোন ও স্যামসাঙ এর উৎপন্ন মেমরি চিপ ব্যবহার করে।
১৯৯৫ সালে স্যামসাঙ প্রথম লিকুইড ক্রিস্টাল ডিসপ্লে বা এলসিডি পর্দা তৈরী করে। এবং তার মাত্র ১০ বছরের মধ্যে ২০০৬ সালে স্যামসাঙ বিশ্বের সবচেয়ে বড় টেলিভিশন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
বিশ্বব্যপী স্যামসাঙ এর নানা ধরনের ব্যবসা ও প্রযুক্তি পন্যের বাজারে শীর্ষস্থান দখলের পূর্ব অভিজ্ঞতাই মূলত স্যামসাঙকে স্মার্ট ফোনের বাজারেও শীর্ষে নিয়ে এসেছে।
এছাড়াও সারাবিশ্বে স্যামসাঙ এর রয়েছে নিজেদের পরিবহণ ও সরবরাহ ব্যবস্থা। যার ফলে বিপুল পরিমাণ স্মার্ট ফোন উৎপাদন করে খুব সহজেই স্যামসাঙ বিশ্বব্যপী তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারছে।
বিশ্বের স্মার্ট ফোন বাজারের ৭৬ শতাংশ দখল করে রেখেছে মাত্র ১০ টি স্মার্ট ফোন কোম্পানি। আর বাকি ২৪ শতাংশ বাজার দখলের প্রতিযোগিতা করছে প্রায় ৬ শতাধিক প্রতিষ্ঠান।
শীর্ষ ১০ কোম্পানির ৭৬ শতাংশ বাজারের ও সিংহ ভাগ ডিভাইস সরবরাহ করে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে স্যামসাঙ।
২০১৮ সালের প্রথম তিন মাসেই স্যামসাঙ সাত কোটি আশি লাখ ইউনিট স্মার্ট ফোন সরবরাহ করেছে। আর এর পরেই ১৪.৫ শতাংশ বাজার দখল নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে অ্যাপল।
উন্নত বাজার গুলোয় ডিভাইস গুলোর ধীর গতির কারণেই বিশ্ব বাজারে স্মার্ট ফোনের চাহিদা কমছে। তবে ক্রম বর্ধমান বাজার গুলোয় মাঝারি দামের স্মার্ট ফোনের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
আর সেখানেও স্যামসাঙ এর রয়েছে আধিপত্য। বাজারে নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে প্রতি বছর প্রায় দেড় হাজার এর কোটি ডলার এরও বেশি মূল্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করে থাকে স্যামসাঙ।
No comments